গোপাল মোহন্ত, গোবিন্দগঞ্জ ►
দখল আর দুষণে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে গোবিন্দগঞ্জের করতোয়া নদী। উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের খলসী নামক স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত স্লইজ গেটের কারণে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবী এলাকাবাসীর।
উত্তরের জেলা পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুর হয়ে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার প্রবেশ করা প্রমত্তা করতোয়া নদী গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভা হয়ে বগুড়া জেলার মধ্যদিয়ে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে মিলিত হয়েছে। এক সময় এই নদীতে চলত মালবাহী ছোট বড় বাণিজ্যিক নৌকা,নদীর জলে মৎস্য আহরণ করে মৎম্যজীবিদের জুটতো অন্নের সংস্থান, আর এই নদীর ওপর ভরসা করে নদীর দুপারে গড়ে উঠে ছোটবড় অনেক শহর-বন্দর। কালের আবর্তে সেই নদীর অত্বিস্ত বিলীণ হতে বসেছে।
কেবল বন্যা আর বর্ষা মৌসুমেই জানান দেয় এর অস্তিত্ব। ৯০এর দশকে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যা থেকে বাঁচানোর অজুহাতে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার খলসী নামক স্থানে নদীতে একটি স্লইজগেট নির্মাণ করে। আর এতেই পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নদীটিকে যেন গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। বর্তমানে চরম ক্ষতির মুখে নদী এলাকার প্রকৃতি ও পরিবেশ। স্লইজ গেট অপসারণ করে পুন:খননের মাধ্যমে দ্রুত নদীটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি এলাকাবাসী।
এছাড়াও নদীটির পানি প্রবাহ বন্ধের কারণে নদীতে থাকা মাছ ,জলজ প্রাণির অস্তিত্ত্ব বিলীণ সহ জীব বৈচিত্র হারিয়ে গেছে। সুযোগ বুঝে দু’পাড়ের স্বার্থনেস্বী মহল নদীর জায়গা দখলে নেওয়ায় নদীটি সরু নালায় রুপ নিয়েছে কোথাও কোথাও। এতে চরম ক্ষতির স্বীকার হচ্ছে নদী তীরবর্তী এলাকা মানুষ, প্রকৃতি ও পরিবেশ।
এক সময় যে নদী দিয়ে বড় বড় পালতোলা নৌকা চলাচল, জেলেদের মৎস্য শিকার, কৃষকরা নদীর পানি সেচ কার্যে ব্যবহার করা হতো। এখন এলাকার মানুষের কাছে শুধুই স্মৃতি। নদীর পানি প্রবাহ বন্ধের করনে ভরাট হয়ে করতোয়া এখন অস্তিত্ব সংকটে। তাই স্লইজ গেট অবসারণ করে পূন:খননের মাধ্যমে পূর্বের ন্যায় পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনার দাবী পরিবেশ প্রেমী মানুষ।
করতোয়া নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দা আবু মনসুর বলেন এক সময় এ নদীতে মাছ ধরা, এর পানি ফসলী জমির সেচকার্যে ব্যবহার করাসহ নদীর পানি দিয়ে নানাবিধ কাজে আসলেও এখন ভরাট হয়ে যাওয়া নদীটি প্রায় সারা বছরি শুকিয়ে থাকে। এ নদীতে এখন মাছ তো দূরের কথা অন্য জলজ প্রাণীর অস্তিত্ব খুজে পাওয়া দুস্কর।
তিনি স্লইজ গেটটি অবসারণ করে করতোয়া নদীটি পূন:খননের মাধ্যমে পূর্বের ন্যায় পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে স্থানীয় প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ প্রধান বলেন, করতোয় নদী খননের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যে প্রস্তাবনা পাঠানো হযেছে। খনন হলে পূর্বের ন্যায় নদীটি পানি প্রবাহ ফিরে অসবে।
প্রকৃতি ও পবিবেশ রক্ষায় এবং গুরুত্ব বিবেচনায় হারিয়ে যেতে বসা নদীটি রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেবে এমনটি প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।